রোমানিয়ায় চাকরির সুযোগ ও আবেদন প্রক্রিয়া | ২০২৫ আপডেটেড গাইড
বর্তমানে ইউরোপে কর্মসংস্থানের গন্তব্য হিসেবে রোমানিয়া বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ফিলিপাইন থেকে হাজার হাজার শ্রমিক এখন রোমানিয়ায় কাজ করতে যাচ্ছেন। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়েও রোমানিয়ায় শ্রমিকের ঘাটতি রয়েছে অনেক ক্ষেত্রে।চলুন জেনে নিই—রোমানিয়ায় কোন কোন পেশার চাহিদা সবচেয়ে বেশি, কীভাবে আপনি আবেদন করবেন এবং কোন নিয়মগুলো অবশ্যই ্মেনে চলতে হবে।
🛠️ রোমানিয়ায় কোন কোন পেশায় সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে?
রোমানিয়ায় নিম্ন-মধ্য পর্যায়ের দক্ষ ও অদক্ষ কর্মীদের জন্যে প্রচুর কাজের চাহিদা রয়েছে। নিচে উল্লেখযোগ্য কিছু কাজের সেক্টরের তালিকা দেয়া হলো:🏗️ নির্মাণ খাত (Construction)
রাজমিস্ত্রি কাজে
হেল্পার কাজে
প্লাম্বার কাজে
ইলেকট্রিশিয়ান কাজে
🏭 ফ্যাক্টরি ও উৎপাদন খাত(Factory Work)
প্যাকেজিং কাজে
লেবেলিং কাজে
মেশিন অপারেটর কাজে
কারখানা হেল্পার কাজে
🧹 হোটেল ও হাউসকিপিং খাত
ক্লিনার কাজে
কিচেন হেল্পার কাজে
ওয়েটার/ওয়েট্রেস কাজে
রুম সার্ভিস কাজে
🚚 পরিবহন খাত
ড্রাইভার (হেভি ও লাইট) কাজে।
ডেলিভারি ম্যান কাজে।
👷 কৃষি খাত
ফলমূল সংগ্রহকারী কাজে।
গাছপালা পরিচর্যাকারী কাজে।
📋 রোমানিয়ায় যেতে আবেদন করার পদ্ধতি সমূহঃ
রোমানিয়ায় যেতে হলে আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। নিচে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিত ব্যাখ্যা করা হলো:1️⃣ চাকরির অফার বা কন্ট্রাক্ট সংগ্রহ করা
প্রথমে আপনাকে একজন বৈধ নিয়োগদাতার (employer) কাছ থেকে কাজের অফার/কন্ট্রাক্ট পেপার পেতে হবে। এটি সাধারণত লাইসেন্সপ্রাপ্ত বিদেশি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে এগুলো হয়ে থাকে।
2️⃣ ওয়ার্ক পারমিট/ভিসা অনুমোদন
নিয়োগদাতা রোমানিয়ার ইমিগ্রেশন অফিসে আপনার হয়ে ওয়ার্ক পারমিটের আবেদন করতে হবে। এই অনুমোদন আসতে ৩০–৬০ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে।
3️⃣ ভিসা আবেদন (Type D Visa)
ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর আপনি নিজ দেশ থেকে রোমানিয়ান দূতাবাসে গিয়ে Type D ভিসার জন্য আবেদন করবেন। ভিসা পেতে যা লাগবে:
পাসপোর্ট (কমপক্ষে ১ বছরের মেয়াদসহ থাকতে হবে)
পাসপোর্ট সাইজ ছবি সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে
ওয়ার্ক কন্ট্রাক্ট পেপার
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট
মেডিকেল রিপোর্ট
ভিসা ফি (প্রায় ৮০ ইউরো)
4️⃣ ভিসা পাওয়ার পর ফ্লাইট বুকিং
ভিসা হাতে পেলে টিকিট কেটে রোমানিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দিন। অনেক সময় নিয়োগদাতা বিমান ভাড়ার খরচ বহন করে থাকে।
💰 খরচ ও সময়কাল কেমন?
এজেন্সি ফি= ২.৫ - ৪ লাখ টাকা (দেশ ও সেক্টরভেদে)মেডিকেল ও পুলিশ ক্লিয়ারেন্স= ৮,০০০ - ১৫,০০০ টাকা
ভিসা ফি ৮০ = ইউরো (প্রায় ১০,০০০ টাকা)
টিকিট= ৬০,০০০ - ৯০,০০০ টাকা
⏳ সময়সীমা: আবেদন থেকে রোমানিয়ায় পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে ৩–৫ মাস।
⚠️ সতর্কতা ও পরামর্শ
শুধুমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত রিক্রুটিং এজেন্সি বা ভেরিফায়েড বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমেই আবেদন করুন।
কখনো অগ্রিম টাকা দিয়ে প্রতারিত হবেন না।
কাজের চুক্তিপত্র ভালোভাবে পড়ে সই করুন।
রোমানিয়া যাওয়ার আগে ভাষা, সংস্কৃতি ও আবাসন বিষয়ে জেনে নিন।
💚 রোমানিয়া সুবিধা কি?
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্য দেশ।স্থায়ী বসবাস ও পরিবার আনয়ন সম্ভবনা থাকে।
উন্নত চিকিৎসা ও নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে।
ভালো বেতন (গড়ে ৫০০–১০০০ ইউরো/মাস) হতেপারে।
অন্যান্য ইউরোপে কাজের সুযোগ সুবিধা থাকে।
🔚 উপসংহার
রোমানিয়ায় কর্মসংস্থানে আগ্রহী বাংলাদেশিদের জন্যে এটি একটি বড় সুযোগ। তবে সতর্কতার সাথে অবশ্যই সমস্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। সরকারি অনুমোদন ছাড়া কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির ফাঁদে পা দেওয়া উচিত নয়। দক্ষতা, সৎ নিয়ত এবং সঠিক পদ্ধতিতে এগুলেই আপনি রোমানিয়ার মাটিতে নিরাপদ ও সফল কর্মজীবন গড়ে তুলতে পারবেন।