Type Here to Get Search Results !

#Advertisement

গ্যালাক্সি কী ও কত প্রকার? ব্যাখ্যা ও বিস্ময়কর তথ্য

গ্যালাক্সি-কী-ও-কত-প্রকার-ব্যাখ্যা-ও-বিস্ময়কর-তথ্য


গ্যালাক্সি কী ও কত প্রকার? ব্যাখ্যা ও বিস্ময়কর তথ্য

একবার ভাবুন তো, আপনি রাতে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছেন। আকাশজোড়া তারা। ছোটবেলায় আমরা অনেকেই তারা দেখে বলতাম, “ওগুলো কি আসলে ঝিকিমিকি বাতি?” কিন্তু এখন আপনি জানেন – তারা মানে হলো বিশাল বিশাল আগুনের গোলা, সূর্যের মতো একেকটা তারা নিজের আলোতে জ্বলছে।
তবে সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপার হলো, এই তারাগুলো আলাদা আলাদা নয়। তারা সবাই মিলে একটা বড় পরিবারে থাকে। সেই পরিবারের নাম হলো গ্যালাক্সি


⭐ গ্যালাক্সি কী 
আসলে ?

গ্যালাক্সি মানে হলো তারকা, গ্রহ, গ্যাস, ধূলিকণা ও আরও অনেক কিছু নিয়ে গঠিত মহাশূন্যের এক বিশাল শহর।
যেমন, আপনি যেভাবে ঢাকায় থাকেন, বা নিউইয়র্কের মতো কোনো শহরে মানুষ থাকে, ঠিক সেভাবেই সূর্য, পৃথিবীসহ কোটি কোটি তারা একটা মহাজাগতিক শহরে থাকে — সেটাই গ্যালাক্সি।
আর এই শহরের "নাগরিক" শুধু তারা নয়—থাকে ব্ল্যাক হোল, ধোঁয়ার মতো গ্যাস, ধূলি, এমনকি এমন বস্তু যেটাকে চোখে দেখা যায় না—ডার্ক ম্যাটার।

🌍 আমরা কোন গ্যালাক্সিতে বাস করি?

আমরা বাস করি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি-তে। বাংলা করলে যার নাম দাঁড়ায় দুধের নদী। কেন এমন নাম? কারণ খালি চোখে রাতের আকাশে দুধের মতো ছড়িয়ে থাকা এক রেখা দেখা যায়। প্রাচীন মানুষরা ভেবেছিল এটা দুধের নদী। পরে বিজ্ঞান জানাল — এটা আসলে আমাদের গ্যালাক্সির একটা অংশ।
মিল্কিওয়েতে আমাদের মতোই কোটি কোটি গ্রহ-তারা আছে। আর আমরা এই বিশাল শহরের এক ছোট্ট কোণে, একটা মাঝারি সাইজের তারার (সূর্য) চারপাশে ঘুরতে থাকা একটি নীল গ্রহে বাস করছি—যার নাম পৃথিবী।

🔭 মহাবিশ্বে কত গ্যালাক্সি আছে?

এ প্রশ্নের উত্তর শুনলে আপনি চমকে যাবেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের মহাবিশ্বে গ্যালাক্সির সংখ্যা ১০০ বিলিয়ন থেকে ২ ট্রিলিয়ন হতে পারে! মানে কোটি কোটি নয়, শত শত কোটি নয়—হাজার হাজার কোটি গ্যালাক্সি।
যারা “হাবল স্পেস টেলিস্কোপ” নামে মহাকাশে বসানো বিশাল ক্যামেরা দিয়ে আকাশের গভীর ছবি তোলে, তারা জানায়—প্রতিটি ছোট্ট দাগ, যেটা আপনি একটা তারা ভাবেন, সেটা আসলে একেকটা গ্যালাক্সি হতে পারে।
এত গ্যালাক্সি! ভাবতেই গা শিউরে ওঠে, তাই না?

🌀 গ্যালাক্সি কীভাবে তৈরি হয়?

সবকিছুর শুরু হয়েছিল প্রায় ১৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে, বিগ ব্যাং নামের এক বিশাল বিস্ফোরণের মাধ্যমে। তখন ছিল শুধু গ্যাস আর শক্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই গ্যাস জমাট বেঁধে তারা হয়েছে, তারারা একত্রিত হয়ে গ্যালাক্সি গঠন করেছে।
একেকটি গ্যালাক্সি গঠনে সময় লেগেছে কোটি কোটি বছর। আজও অনেক গ্যালাক্সি তৈরি হচ্ছে, আবার অনেক গ্যালাক্সি একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে এক হয়ে যাচ্ছে।
মনে করুন, শহর যেমন ধীরে ধীরে বাড়ে, তেমনি গ্যালাক্সিও বড় হতে থাকে।

📚 গ্যালাক্সির ধরন — কেমন কেমন গ্যালাক্সি আছে?

বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সিকে ৪টি প্রধান শ্রেণিতে ভাগ করেছেন, এদের চেহারা ও গঠনের ভিত্তিতে।

১. সর্পিল গ্যালাক্সি (Spiral Galaxy)
এগুলো দেখতে চাকা ঘুরার মতো। মাঝে থাকে বড় একটা কেন্দ্র, আর চারদিকে সর্পিল বাহু।
🔸 উদাহরণ: আমাদের মিল্কিওয়ে

২. বার্ড-স্পাইরাল গ্যালাক্সি (Barred Spiral)
এগুলোও চাকার মতো, তবে মাঝে একটা লম্বা বার বা রেখা থাকে।
🔸 উদাহরণ: আন্ড্রোমেডা গ্যালাক্সি

৩. উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি (Elliptical Galaxy)
ডিম্বাকৃতি বা গোল গোল হয়। এখানে তারাগুলো গা ঘেঁষাঘেঁষি করে থাকে।
🔸 গ্যাস ও ধূলি কম থাকে, তাই নতুন তারা খুব একটা তৈরি হয় না।

৪. অনিয়মিত গ্যালাক্সি (Irregular Galaxy)
এদের কোনো নিয়ম নেই। এলোমেলোভাবে গঠিত হয়, যেন আকাশে ছড়িয়ে থাকা ধোঁয়ার দাগ।
🔸 উদাহরণ: ম্যাগেলানিক ক্লাউড

🌌 গ্যালাক্সির ভেতরে কী থাকে?

একটা গ্যালাক্সির মধ্যে সাধারণত থাকে—
কোটি কোটি তারা
গ্রহ ও চাঁদ
গ্যাস ও ধূলিকণা
ব্ল্যাক হোল (প্রায় প্রতিটা গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকে বিশাল ব্ল্যাক হোল)
ডার্ক ম্যাটার (যেটা আমরা দেখতে পাই না, কিন্তু মহাকর্ষ অনুভব করতে পারি)

💫 ভবিষ্যতে কী হতে পারে?

বিজ্ঞানীরা মনে করেন, প্রায় ৪ বিলিয়ন বছর পরে আমাদের মিল্কিওয়ে ও আন্ড্রোমেডা গ্যালাক্সি মুখোমুখি হবে। এই দুই বিশাল গ্যালাক্সি একে অপরকে টেনে নিয়ে মিশে যাবে। তখন জন্ম নেবে নতুন আরেকটি বিশাল গ্যালাক্সি।
ভয় পাবেন না! এতে পৃথিবী নষ্ট হয়ে যাবে না, কারণ তারাগুলোর মধ্যে দূরত্ব এত বেশি যে বাস্তবে সংঘর্ষ হয় না। আমরা শুধু নতুন আকাশ দেখব—নতুন তারা, নতুন ইতিহাস।

---
🤯 কিছু অবাক করা তথ্য
গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা ব্ল্যাক হোল এত শক্তিশালী, আলোও বের হতে পারে না!
প্রতিটি গ্যালাক্সিতে গড়ে ১০০ বিলিয়ন তারা থাকে
মহাবিশ্বের মোট দৃষ্টিগোচর বস্তুর ৯৫% আমরা এখনও বুঝতে পারি না!

উপসংহার

গ্যালাক্সি আমাদের অস্তিত্বের আদি ঠিকানা। এটা শুধু বিজ্ঞানীদের জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেকের জন্য এক বিস্ময়। আপনি-আমি, আমাদের পৃথিবী, সূর্য, এমনকি রাতের আকাশের প্রতিটি তারা—সবই একটি গ্যালাক্সির অংশ।
মহাবিশ্ব অনেক বড়। আর আমরা সেই বিশালতার মাঝখানে দাঁড়িয়ে একটা প্রশ্ন করি — "একা কি আমরা?" হয়তো উত্তর লুকিয়ে আছে কোনো দূর গ্যালাক্সির কোণায়…

জনপ্রিয় সিপিএ নেটওয়ার্ক এবং সিপিএ মার্কেটিংয়ের ভবিষ্যৎএফিলিয়েট-মার্কেটিং-কি-ভবিষ্যৎ-কি-2025গুগল ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিতে শেখার উপায় ও সফলতার বাস্তব গল্প