Type Here to Get Search Results !

#Advertisement

ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা: আবেদন প্রক্রিয়া, ডকুমেন্টস ও টিপস

 
ইংল্যান্ড-ট্যুরিস্ট-ভিসা-আবেদন-প্রক্রিয়া-ডকুমেন্টস-ও-টিপস

ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা: বাংলাদেশিদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য, ডকুমেন্টস ও আবেদন প্রক্রিয়া

আজকাল অনেক বাংলাদেশি ইংল্যান্ড ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন — কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঘুরতে চান, কেউ বন্ধুদের সঙ্গে ট্যুরে যেতে চান আবার কেউ কেউ ঐতিহাসিক লন্ডন শহরের মিউজিয়াম, বিখ্যাত স্থাপত্য বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান। ইংল্যান্ডে ভ্রমণ করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন হয় একটি বৈধ ট্যুরিস্ট ভিসা
এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো:
* ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসার ধরন
* আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস
* কিভাবে আবেদন করবেন ধাপে ধাপে
* খরচ, সময়সীমা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ
* ভিসা প্রত্যাখ্যান এড়াতে করণীয়

🛂 ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা: সংক্ষেপে পরিচিতি

ইংল্যান্ড মূলত ইউনাইটেড কিংডমের (UK) অংশ। তাই আপনি যেটাকে "ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা" বলছেন, সেটি আসলে UK Standard Visitor Visa নামে পরিচিত। এই ভিসা দিয়ে আপনি ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস এবং নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড — সব জায়গায় ভ্রমণ করতে পারবেন।

 📋 ট্যুরিস্ট ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস

ভিসা আবেদন করার আগে আপনার কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখতে হবে। নিচে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টগুলোর তালিকা দেওয়া হলো:
১. পাসপোর্ট
* ন্যূনতম ছয় মাস মেয়াদ থাকতে হবে।
* কমপক্ষে ১টি ফাঁকা পৃষ্ঠা।
২. সম্পূর্ণ ফরম পূরণ (Online Application Form)
* [UK Visas and Immigration (GOV.UK)](https://www.gov.uk/standard-visitor) ওয়েবসাইটে ফর্ম পূরণ করতে হবে।
 ৩. পাসপোর্ট সাইজের ছবি
* সদ্য তোলা (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ড) ছবি।
 ৪. ব্যাংক স্টেটমেন্ট (শেষ ৬ মাস)
* পর্যাপ্ত টাকা থাকতে হবে (কমপক্ষে ২-৪ লাখ টাকা)।
* ব্যাংক কর্তৃপক্ষ দ্বারা সত্যায়িত।
 ৫. চাকরির প্রমাণ (যদি থাকে)
* অফিসিয়াল NOC (No Objection Certificate)
* চাকরির নিয়োগপত্র এবং ছুটির চিঠি
 ৬. ব্যবসার প্রমাণ (যদি ব্যবসায়ী হন)
* ট্রেড লাইসেন্স, ট্যাক্স রিটার্ন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট
 ৭. ট্রাভেল প্ল্যান/ইটিনারারি
* আপনি কোথায় কোথায় যাবেন, কোথায় থাকবেন, কতদিন থাকবেন, তার বিস্তারিত প্ল্যান।
 ৮. হোটেল বুকিং ও রিটার্ন ফ্লাইট টিকিট (প্রাথমিক বুকিং যথেষ্ট)
* নিশ্চিত করতে হয় যে আপনি ঘুরে ফিরে আসবেন।
 ৯. স্পন্সরশিপ লেটার (যদি কেউ স্পন্সর করে থাকে)
* স্পন্সরের ব্যাংক স্টেটমেন্ট, পরিচয়পত্র ও আমন্ত্রণপত্র।

 📝 কিভাবে আবেদন করবেন: ধাপে ধাপে গাইড

ধাপ ১: অনলাইনে আবেদন ফর্ম পূরণ
প্রথমে আপনাকে [https://www.gov.uk/standard-visitor](https://www.gov.uk/standard-visitor) লিংকে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। ফর্মে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পাসপোর্ট তথ্য, ভ্রমণের কারণ, পূর্ববর্তী ভ্রমণের ইতিহাস ইত্যাদি জানতে চাওয়া হয়।
 ধাপ ২: ভিসা ফি পরিশোধ
অনলাইন ফর্ম সাবমিট করার পর ভিসা ফি দিতে হয়। আপনি কার্ডের মাধ্যমে অনলাইনেই পরিশোধ করতে পারবেন।
 ধাপ ৩: অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং
এরপর আপনাকে ঢাকার **VFS Global** সেন্টারে বায়োমেট্রিক (আঙুলের ছাপ ও ছবি) দেয়ার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুক করতে হবে।
 ধাপ ৪: ডকুমেন্ট সাবমিশন
VFS Global সেন্টারে নির্ধারিত তারিখে সব ডকুমেন্ট জমা দিন এবং বায়োমেট্রিক সম্পন্ন করুন।
 ধাপ ৫: ভিসা প্রসেসিং ও পাসপোর্ট সংগ্রহ
সাধারণত ১৫-২০ কার্যদিবসের মধ্যে ভিসার সিদ্ধান্ত আসে। VFS থেকে মেসেজ বা ইমেইলের মাধ্যমে আপডেট পাবেন।

💰 ইংল্যান্ড ট্যুরিস্ট ভিসা ফি কত?

| ভিসা মেয়াদ                        | ফি (বাংলাদেশি টাকায় আনুমানিক) |
| --------------------------------- | ----------------------------- |
| ৬ মাস (স্ট্যান্ডার্ড ভিজিটর ভিসা) | প্রায় ১৩,০০০ টাকা            |
| ২ বছর মাল্টিপল এন্ট্রি            | প্রায় ৪৯,০০০ টাকা            |
| ৫ বছর মাল্টিপল এন্ট্রি            | প্রায় ৮৯,০০০ টাকা            |

**বি.দ্র:** মূল্য সময় ও কারেন্সি রেট অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে।
ইংল্যান্ড-ট্যুরিস্ট-ভিসা-আবেদন-প্রক্রিয়া-ডকুমেন্টস-ও-টিপস

ভিসা রিজেকশন এড়াতে করণীয়

ইংল্যান্ডের ভিসা সহজ নয় — তবে সঠিকভাবে আবেদন করলে মঞ্জুরও হয়। নিচের বিষয়গুলো মাথায় রাখুন:
* সব তথ্য সঠিক ও বাস্তব ভিত্তিক দিন।
* পর্যাপ্ত আর্থিক সামর্থ্য প্রমাণ করুন।
* ভ্রমণ শেষে দেশে ফেরার ইচ্ছা ও প্রমাণ দেখান।
* মিথ্যা বা অতিরঞ্জিত তথ্য এড়িয়ে চলুন।

 🧳 কিছু বাস্তবভিত্তিক টিপস (বাংলাদেশিদের জন্য)
✅ ভ্রমণের আগে হোটেল ও ফ্লাইট প্রাথমিকভাবে বুকিং রাখুন, কনফার্মড না হলেও চলবে।
✅ ব্যাংক স্টেটমেন্ট যেন নিয়মিত লেনদেনযুক্ত হয়। হঠাৎ করে টাকা জমা দিয়ে স্টেটমেন্ট দিলে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
✅ যারা আগে কোনো দেশের ভিসা পেয়েছেন (যেমন: শেনজেন, আমেরিকা, কানাডা), তাদের জন্য ইংল্যান্ডের ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
✅ ইংল্যান্ডে কেউ থাকলে (আত্মীয়-স্বজন), তার ইনভাইটেশন লেটার ভিসার সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।

 🇬🇧 ইংল্যান্ড ঘুরে দেখার কিছু জনপ্রিয় স্থান

বিগ বেন ও লন্ডন আই – টেমস নদীর পাশে আইকনিক দর্শনীয় স্থান
বাকিংহাম প্যালেস– রাজপরিবারের আবাসস্থল
স্টোনহেঞ্জ – প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন
কেমব্রিজ ও অক্সফোর্ড – বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয় শহর
স্কটল্যান্ড হাইল্যান্ডস – প্রকৃতির প্রেমে পড়ার মতো সুন্দর

 🔚 উপসংহার
ইংল্যান্ড ঘুরতে যাওয়া মানেই একটা জীবনের অভিজ্ঞতা। কিন্তু তার আগে দরকার সঠিকভাবে ট্যুরিস্ট ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা। উপরের তথ্যগুলো অনুসরণ করলে আশা করা যায়, আপনার ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া হবে সহজ ও সফল। মনে রাখবেন, ধৈর্য্য এবং সঠিক ডকুমেন্টেশনই এখানে সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি।