Type Here to Get Search Results !

#Advertisement

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগে সিন্ডিকেট বাতিলের দাবি

 মালয়েশিয়ায়-বাংলাদেশি-কর্মী-নিয়োগে-সিন্ডিকেট-বাতিলের-দাবি

মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিক নিয়োগে সিন্ডিকেটমুক্ত নীতির আহ্বান – সাবেক এমপি চার্লস সান্তিয়াগোর খোলা চিঠি

**কলিং ভিসা ও শ্রমিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনতে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম-এর সরকারের প্রতি শক্ত অবস্থান গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির ক্লাং রাজ্যের সাবেক সংসদ সদস্য এবং আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস (APHR)-এর সহ-সভাপতি চার্লস সান্তিয়াগো।

 🔍 প্রেক্ষাপট:

বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানো নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে সিন্ডিকেট পদ্ধতি। মূল অভিযোগ হলো—কয়েকটি নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির হাতে নিয়োগ ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হওয়ায় শ্রমিকদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে, দুর্নীতি বাড়ছে এবং কর্মীরা মালয়েশিয়ায় যাওয়ার আগেই চরম ঋণগ্রস্ত হচ্ছেন।

 📢 চার্লস সান্তিয়াগোর বক্তব্য:

সম্প্রতি মালয়েশিয়ার শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম Free Malaysia Today-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে চার্লস সান্তিয়াগো উল্লেখ করেন:
*“বাংলাদেশি শ্রমিকদের কল্যাণে একটি বাধ্যতামূলক, কার্যকর ও কঠোর শ্রমচুক্তি প্রয়োজন, যাতে সিন্ডিকেট বন্ধ হয়, নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হয় এবং কেউ আর দুর্নীতির বলি না হয়।”
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় চাকরি পেতে বাংলাদেশি কর্মীদের ২০,০০০ থেকে ৩০,০০০ রিঙ্গিত পর্যন্ত দিতে বাধ্য করা হচ্ছে, যা তাদের আর্থিক ও মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।

🛑 চুক্তির ফাঁকফোকর নিয়েও সমালোচনা:

২০২১ সালে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ যে দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষর করে, তা কার্যকর রয়েছে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। তবে সান্তিয়াগোর মতে, এই চুক্তিতেই রয়েছে মূল সমস্যা। কারণ এতে মালয়েশিয়াকে নিয়োগকারী এজেন্সি বাছাইয়ের পূর্ণ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা সিন্ডিকেট গঠনের পথ খুলে দিয়েছে।

📌 বাংলাদেশের অবস্থান:

একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ড. আসিফ নজরুল– যিনি বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট উপদেষ্টা – বলেছেন, বর্তমান চুক্তি সংশোধন না হলে **বাংলাদেশ সরকার শ্রমিক পাঠানো সাময়িকভাবে স্থগিত করতে পারে**।

 🧩 সান্তিয়াগোর প্রস্তাব:

* **একটি বাধ্যতামূলক শ্রম চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে—যা কেবল MoU-তে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আইনি বাধ্যবাধকতা ও প্রয়োগযোগ্য শাস্তির ব্যবস্থা থাকবে।
* **নিয়োগকারী সংস্থার সংখ্যা খোলামেলা রাখতে হবে, যেন সিন্ডিকেট গড়ে না ওঠে।
* **দুর্নীতি প্রতিরোধে সুনির্দিষ্ট জবাবদিহি কাঠামো ও জরিমানার বিধান রাখা জরুরি।

 🔍 সিন্ডিকেট সমস্যা: শুধু বাংলাদেশ নয়, মালয়েশিয়ারও ক্ষতি

চার্লস সান্তিয়াগোর মতে, এই সিন্ডিকেট কেবল শ্রমিকদের নয়, মালয়েশিয়ার সুনামকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। তিনি বলেন:
যতদিন এই ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা চলবে, ততদিন মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে লজ্জার মুখে পড়বে এবং শিল্পখাত অর্থের অপচয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকবে।”**

🎯 আগামী পরিকল্পনা:

চার্লস সান্তিয়াগো আশা প্রকাশ করেন, ২০২৫ সালে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০ শ্রমিক নিয়োগ দেবে, তবে সেটি যেন সিন্ডিকেটমুক্ত ও মানবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়, সেটিই তার মূল আবেদন।

 📢 উপসংহার:
বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া শ্রমবাজারের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উভয় দেশের সদিচ্ছা ও স্বচ্ছ চুক্তির উপর। শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে হলে সিন্ডিকেটের বাইরে এসে ন্যায্য, উন্মুক্ত নিয়োগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
এই মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে প্রয়োজন উদ্যোগ ও বাস্তবভিত্তিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ, যা না হলে লাখো শ্রমিক ভবিষ্যতে আরও জটিলতায় পড়তে পারে।