
🎓 ইংল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য সহজ গাইড
ইউকে বা ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করা অনেক বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা, বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি ও বৈশ্বিক ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ থাকায় যুক্তরাজ্য বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্টাডি ডেস্টিনেশন। তবে অনেকেই জানেন না কীভাবে শুরু করবেন, কোথা থেকে আবেদন করবেন, কী কাগজ লাগবে ইত্যাদি। আজকের এই লেখায় আমরা ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সহজভাবে ব্যাখ্যা করেছি।
*কিছু জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়:
* University of Oxford
* University of Manchester
* University of Birmingham
* University of Greenwich
* University of Hertfordshire (বাংলাদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয়)
*প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
* পাসপোর্ট কপি
* Academic certificates (SSC, HSC, Bachelor)
* IELTS / UKVI IELTS স্কোর
* SOP (Statement of Purpose)
* Academic Reference Letter
Step 1: কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করা
প্রথম কাজ হলো আপনার আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারের সাথে মিলিয়ে একটি কোর্স বাছাই করা। তারপর সেই কোর্সটি কোন কোন UKVI-listed বিশ্ববিদ্যালয়ে অফার করে, তা যাচাই করতে হবে।*কিছু জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়:
* University of Oxford
* University of Manchester
* University of Birmingham
* University of Greenwich
* University of Hertfordshire (বাংলাদেশিদের মধ্যে জনপ্রিয়)
📑 Step 2: ভর্তি আবেদন (Offer Letter পাওয়া)
যখন আপনি একটি কোর্স চূড়ান্ত করবেন, তখন সেই কোর্সের জন্য আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ডেডলাইনের মধ্যে। সাধারণত অনলাইনে আবেদন করতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট বা UCAS এর মাধ্যমে।*প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
* পাসপোর্ট কপি
* Academic certificates (SSC, HSC, Bachelor)
* IELTS / UKVI IELTS স্কোর
* SOP (Statement of Purpose)
* Academic Reference Letter
*আবেদনের পর ফলাফল দুই রকম হতে পারে:
* ১/ Conditional Offer Letter কনডিশনাল অফার লেটার হলো সামান্য শর্ত পূরণ করে ভর্তির নিশ্চিতকরন হওয়া লাগবে।
* ২/ Unconditional Offer Letter** – কোনো শর্ত ছাড়াই ভর্তি নিশ্চিত।
* ১/ Conditional Offer Letter কনডিশনাল অফার লেটার হলো সামান্য শর্ত পূরণ করে ভর্তির নিশ্চিতকরন হওয়া লাগবে।
* ২/ Unconditional Offer Letter** – কোনো শর্ত ছাড়াই ভর্তি নিশ্চিত।
🧾 Step 3: Confirmation of Acceptance for Studies (CAS)
শর্ত পূরন হলে বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে CAS Letter জমা করে দেবে। সিএএস লেটার হলো বিশেষ রেফারেন্স নম্বর UK Visa and Immigration বা UKVI কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন যে আপনি বৈধভাবে ও সফল্ভাবে ভর্তির কার্জ সম্পন্ন করেছেন।**CAS পাওয়ার শর্তগুলো:
* ডিপোজিট ফি প্রদান (প্রায় £2000 থেকে £5000)
* কোর্স ফি নিশ্চিতকরণ
* সব ডকুমেন্ট যাচাই
**বিঃদ্রঃ CAS ছাড়া ভিসা আবেদন সম্ভব না।
*আপনার যা দেখাতে হবে:
* **Tuition Fees: যেটুকু এখনও পরিশোধ করেননি (CAS-এ উল্লেখ থাকবে)
* **Living Cost: প্রতি মাসে £1,334 (লন্ডনের বাইরে) বা £1,334 × 9 = £12,006
**ব্যাংকে টাকা রাখতে হবে: মিনিমাম ২৮ দিন একটানা
**যে অ্যাকাউন্টগুলো চলবে:
* নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
* বাবা-মা/স্পনসরের নামের অ্যাকাউন্ট (Legal relationship প্রমাণ করতে হবে)
**ভিসা আবেদন করার উপায়:
* অনলাইনে আবেদন করুন [https://www.gov.uk/student-visa](https://www.gov.uk/student-visa)
* অ্যাপ্লিকেশন ফি: £490 (প্রায় ৭৫,০০০ টাকা)
* স্বাস্থ্য সেবা চার্জ (IHS): প্রায় £776 প্রতি বছর (যাতে আপনি NHS এর সুবিধা পান)
**প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:**
* পাসপোর্ট
* CAS Letter
* ব্যাংক স্টেটমেন্ট
* Academic certificates
* Tuberculosis (TB) Test Certificate
* IELTS / UKVI IELTS
* IHS পেমেন্ট রসিদ
**কোথায় করাবেন?
* **International Organization for Migration (IOM)** – ঢাকা ও চট্টগ্রামে অফিস রয়েছে।
**ফি:** প্রায় ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা
**সার্টিফিকেটের মেয়াদ:** ৬ মাস
**জিজ্ঞাসা করা হতে পারে:
* কেন এই কোর্স করছেন?
* কেন UK তে পড়তে চাচ্ছেন?
* ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
* কোর্সের ফি কীভাবে দেবেন?
* ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কাদের?
এই ইন্টারভিউর মূল উদ্দেশ্য হলো যাচাই করা আপনি একজন genuine student কি না।
* ডিপোজিট ফি প্রদান (প্রায় £2000 থেকে £5000)
* কোর্স ফি নিশ্চিতকরণ
* সব ডকুমেন্ট যাচাই
**বিঃদ্রঃ CAS ছাড়া ভিসা আবেদন সম্ভব না।
💷 Step 4: ফান্ডিং ও ব্যাংক স্টেটমেন্ট
ভিসা আবেদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হচ্ছে ফিন্যান্সিয়াল ডকুমেন্টেশন।*আপনার যা দেখাতে হবে:
* **Tuition Fees: যেটুকু এখনও পরিশোধ করেননি (CAS-এ উল্লেখ থাকবে)
* **Living Cost: প্রতি মাসে £1,334 (লন্ডনের বাইরে) বা £1,334 × 9 = £12,006
**ব্যাংকে টাকা রাখতে হবে: মিনিমাম ২৮ দিন একটানা
**যে অ্যাকাউন্টগুলো চলবে:
* নিজের নামের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
* বাবা-মা/স্পনসরের নামের অ্যাকাউন্ট (Legal relationship প্রমাণ করতে হবে)
🖥️ Step 5: UK Student Visa আবেদন (Tier 4 visa)
CAS পেলে আপনি আবেদন করতে পারবেন Student Visa এর জন্য।**ভিসা আবেদন করার উপায়:
* অনলাইনে আবেদন করুন [https://www.gov.uk/student-visa](https://www.gov.uk/student-visa)
* অ্যাপ্লিকেশন ফি: £490 (প্রায় ৭৫,০০০ টাকা)
* স্বাস্থ্য সেবা চার্জ (IHS): প্রায় £776 প্রতি বছর (যাতে আপনি NHS এর সুবিধা পান)
**প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট:**
* পাসপোর্ট
* CAS Letter
* ব্যাংক স্টেটমেন্ট
* Academic certificates
* Tuberculosis (TB) Test Certificate
* IELTS / UKVI IELTS
* IHS পেমেন্ট রসিদ
🧪 Step 6: টিউবারকিউলোসিস (TB) টেস্ট
বাংলাদেশ থেকে আবেদনকারীদের জন্য বাধ্যতামূলক TB টেস্ট।**কোথায় করাবেন?
* **International Organization for Migration (IOM)** – ঢাকা ও চট্টগ্রামে অফিস রয়েছে।
**ফি:** প্রায় ৩,৫০০-৪,০০০ টাকা
**সার্টিফিকেটের মেয়াদ:** ৬ মাস
🗣️ Step 7: ভিসা ইন্টারভিউ (Credibility Interview)
ভিসা আবেদন করার পর অনেক সময় UKVI আপনাকে একটি **Telephonic বা Zoom Interview** এর জন্য ডাকতে পারে।**জিজ্ঞাসা করা হতে পারে:
* কেন এই কোর্স করছেন?
* কেন UK তে পড়তে চাচ্ছেন?
* ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
* কোর্সের ফি কীভাবে দেবেন?
* ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কাদের?
এই ইন্টারভিউর মূল উদ্দেশ্য হলো যাচাই করা আপনি একজন genuine student কি না।

📩 Step 8: রেজাল্ট ও ভ্রমণের প্রস্তুতি গ্রহন
আপনার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সফল হলে Biometric Residence Permit (BRP) সংগ্রহের নির্দেশসহ একটি Decision Letter পাবেন।**ভিসার মেয়াদ: কোর্স + ৪ মাস পর্যন্ত
**ট্রাভেল টাইম: কোর্স শুরুর ১ মাস আগে UK যেতে পারবেন
**টিপস:**
* বিমান টিকিট আগে কনফার্ম করবেন না
* UK পৌঁছে বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজিস্ট্রেশন সময়মতো করুন
* BRP নির্ধারিত পোস্ট অফিস থেকে সংগ্রহ করুন
🧠 কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ
✅ নিরাপদ ইংলিশ ভাষা পরিক্ষা বা Secure English Language Test স্কোর ব্যবহার করতে পারেন, যেমন-UKVI IELTS বা SELT✅ SOP যেন ইউনিক ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতানির্ভর হয়
✅ ফিনান্সিয়াল প্রুফ যেন ২৮ দিন একটানা ব্যাংকে থাকে
✅ CAS পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব ভিসার জন্য আবেদন করুন
✅ TB টেস্ট ও ভিসা ইন্টারভিউকে হালকাভাবে নেবেন না
💡 ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসার সুবিধা
* ইউরোপিয়ান মানের ডিগ্রি* পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ (সপ্তাহে ২০ ঘণ্টা)
* পোস্ট-স্টাডি ওয়ার্ক ভিসার সুযোগ (2 Years Graduate Route)
* গ্লোবাল স্কিল উন্নয়ন
* PR বা সিটিজেনশিপের পথ খুলে যায়
📌 উপসংহার
ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া কঠিন নয়, যদি আপনি পরিকল্পিতভাবে প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করেন। কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে এবং আপনি যদি সত্যিই পড়াশোনার জন্য আগ্রহী হন, তবে ভিসা পাওয়া খুব সহজ। শিক্ষাই ভবিষ্যতের মূলধন, আর ইউকে-তে উচ্চশিক্ষা হলে সেই ভবিষ্যৎ হবে আরও উজ্জ্বল।
ইংল্যান্ডে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া কঠিন নয়, যদি আপনি পরিকল্পিতভাবে প্রতিটি ধাপ অনুসরণ করেন। কাগজপত্র ঠিকঠাক থাকলে এবং আপনি যদি সত্যিই পড়াশোনার জন্য আগ্রহী হন, তবে ভিসা পাওয়া খুব সহজ। শিক্ষাই ভবিষ্যতের মূলধন, আর ইউকে-তে উচ্চশিক্ষা হলে সেই ভবিষ্যৎ হবে আরও উজ্জ্বল।