অভিবাসীপ্রত্যাশীদের বিশ্বজুড়ে রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু ২০২৪ সালে
২০২৪ সালে সীমান্ত পাড়ি দিতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক ৮,৯৩৮ জন অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন।
শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এ তথ্য প্রকাশ করেছে। তবে সংস্থাটি সতর্ক করেছে যে প্রকৃত মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে, কারণ অনেক মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত হয় না বা নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান মেলে না। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এপি তাদের প্রতিবেদনে এই চিত্র তুলে ধরেছে।
বিশ্বের বিপজ্জনক অঞ্চলসমূহ এবং মৃত্যুর পরিসংখ্যান
আইওএম-এর তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালে অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চল ছিল এশিয়া, যেখানে ২,৭৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এরপরের স্থানে রয়েছে ভূমধ্যসাগর, যেখানে ২,৪৫২ জন অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকা, যেখানে ২,২৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে।
অন্যান্য অঞ্চলে মৃত্যুর সংখ্যা নিম্নরূপ:
- **ক্যারিবীয় অঞ্চল:** ৩৪১ জন
- **ইউরোপ:** ২৩৩ জন
- **দারিয়েন গিরিখাত (কলম্বিয়া ও পানামার মধ্যবর্তী অঞ্চল):** ১৭৪ জন
আইওএম-এর মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রকল্পের সমন্বয়ক জুলিয়া ব্ল্যাক জানিয়েছেন, বাস্তব মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। কারণ অনেক ক্ষেত্রে নিখোঁজ অভিবাসীদের আর খুঁজে পাওয়া যায় না, এবং অনেক মৃত্যুর ঘটনা কোনও রকমে নথিভুক্ত হয় না।
আন্তর্জাতিক সহায়তা সংকট ও এর প্রভাব
অভিবাসীদের জীবন রক্ষার জন্য কাজ করা আইওএম যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন অর্থসহায়তা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। এর ফলে সংস্থাটি তাদের গুরুত্বপূর্ণ অনেক জীবন রক্ষাকারী’ কর্মসূচি বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়বে লাখো অভিবাসীর ওপর, যারা নতুন করে সংকটে পড়বেন।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের করণীয়
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান অভিবাসন সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে দ্রুত মানবিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও এই সংকট নিরসনে এগিয়ে আসতে হবে।
উপসংহার
২০২৪ সালে অভিবাসীদের মৃত্যু হার আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বৈশ্বিক সংকটের ইঙ্গিত দেয়। নিরাপদ অভিবাসন নীতিমালা ও কার্যকর আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ছাড়া এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়। বিশ্ববাসীকে এখনই সচেতন হতে হবে এবং অভিবাসীদের জীবন রক্ষার জন্য সক্রিয় পদক্ষেপ নিতে হবে।